ব্যান্ডেল চার্চ : ৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ক্রিসমাসের নিয়ম ভাঙতে চলেছে

Share:

হুগলি, ২৪ ডিসেম্বর : ৪০০ বছরের ঐতিহ্যকে ভাঙতে চলেছে ব্যান্ডেল চার্চ। এবার আর মধ্যরাতে নয় বরং ২৪ ডিসেম্বর প্রার্থনা হবে রাত ১০টায়। সঙ্গে ২৫ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি চার্চের মাঠে অবাধ প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।

করোনা আতঙ্কের মাঝেই বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছেন বড়দিনের আনন্দে। এ রাজ্যের বহু প্রাচীন চার্চ হুগলি জেলার ব্যান্ডেল চার্চও বড়দিন উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে। হুগলি জেলার ব্যান্ডেল চার্চ একটি বাঙ্গালীদের কাছে শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান। প্রায় ১২ মাসেই এই চার্চে ভিড় লেগেই থাকে। প্রায় ৪০০ বছরের এই চার্চের একটা আলাদা ঐতিহ্য আছে। দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে মানুষ আসেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম গির্জাগুলির একটি ব্যান্ডেল চার্চের পোষাকি নাম দ্য ব্যাসিলিকা অফ দ্য হোলি-রোসারি, ব্যান্ডেল। ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই চার্চ। প্রতি বছরই প্রথা মেনে মাঝরাতে বড়দিনের প্রার্থনা করা হয়। কিন্তু এবার ভাঙতে চলেছে সেই নিয়ম।

ব্যান্ডেল চার্চ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে ২৫ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি চার্চের মাঠে অবাধ প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এই দু’দিন বাইরে থেকেই চার্চ দর্শন করতে হবে সাধারণ মানুষকে। চার্চের তরফে চার্চের বাইরেই যিশুর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে একটি গোশালা তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই প্রভু যিশুর কাছে ওই দুই দিন প্রার্থনা করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

বড়দিন উপলক্ষে রাজ্য সরকারের তরফে ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে আগামী বছরের প্রথমদিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারী পর্যন্ত নাইট কার্ফুর নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে নাইট কার্ফু শিথিল হওয়া সত্ত্বেও চার্চের ঐতিহ্য ভেঙে কেনও প্রার্থনার সময় বদল করা হচ্ছে?

ব্যান্ডেল চার্চের ফাদার জনির সঙ্গে সম্পর্ক করলে তিনি বলেন, ‘মাঝরাতে হওয়া এই প্রার্থনায় সমস্ত মানুষ অংশ নিতে পারবেন না। একমাত্র খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষেরাই অংশ নিতে পারবেন। তাদের কথা ভেবেই চার্চের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রার্থনা সেরে সকলেই এই কোরোনা পরিস্থিতিতে ভালভাবে বাড়িতে ফিরতে পারেন।’

ফাদার জনির বক্তব্য, কোরোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম কোভিড বিধি যাতে পালিত হয় সেদিকেও চার্চের নজর রয়েছে। সে কারণেই তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চার্চের সীমানার পাশাপাশি উপাসনা গৃহ, চার্চের নতুন হল এবং অডিটোরিয়ামে এই তিন জায়গায় প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। যাতে প্রচুর মানুষ সমাগম হলেও ভিড় এড়ানো সম্ভব হয়।


Share: